সব ধরনের ত্বক ভালো রাখতে ক্লিনজিং, টোনিং ও ময়েশ্চারাইজিং এই তিনটি বেসিক ধাপ নিয়ম মেনে অনুসরণ করতে হবে। এতে ত্বক বাইরে থেকে সুরক্ষিত থাকবে। এ ছাড়া ভেতর থেকে ত্বক ভালো রাখতে স্বাস্থ্যকর ও সহজপাচ্য খাবার খেতে হবে। এ ছাড়া প্রতিদিন অন্তত দুটি দেশি ফল অথবা মিক্সট ফ্রুট সালাদ খান। এক কাপ টক দই রাখুন খাদ্য তালিকায়। ত্বকের সঙ্গে হাড় ও চুল মজবুত হবে। যথাসম্ভব রোদ বাঁচিয়ে চলার পরামর্শ দেব। রোদে বের হলে ছাতা ও স্কার্ফ সঙ্গে রাখুন। ঠাণ্ডার সমস্যা না থাকলে দিনে দুবার গোসল করা ভালো। গোসলের পানিতে অল্প কর্পূর মিশিয়ে নিলে শরীর ও মন সতেজ হয়ে উঠবে মুহূর্তেই। কর্পূরের বদলে গোলাপজল কিংবা এসেনশিয়াল অয়েলও ব্যবহার করা যেতে পারে। বৃষ্টিতে ভেজার আনন্দ থেকে বঞ্চিত করতে চাই না। তবে বৃষ্টিতে ভেজার পর সঙ্গে সঙ্গে শ্যাম্পু-সাবান দিয়ে গোসল করে নিতে হবে। দূষিত বায়ুমণ্ডলের প্রভাবে বৃষ্টির পানিতে থাকা এসিডে ত্বকের ক্ষতি হতে পারে। গোসলে প্রতিদিন সাধারণ সাবানের পরিবর্তে জীবণুনাশক সাবান ব্যবহার করুন। এই মৌসুমে মেকআপের ব্যবহার যথাসম্ভব সীমিত করে ফেলা ত্বকের জন্য নিরাপদ। সাধারণ খাবার পানির বদলে ডিটক্স ওয়াটার ত্বক ও শরীরের জন্য ভালো। ডিটক্স ওয়াটার তৈরির জন্য স্বাভাবিক তাপমাত্রার এক জগ খাবার পানি নিন। একটি গ্রিন টি ব্যাগ ছেড়ে দিন এতে। আরো দিন পাতলা করে কাটা কয়েক স্লাইস লেবু, শসা, গাজর, পুদিনাসহ যেকোনো পছন্দের ফল কিংবা সালাদের সবজি। এবার পানির জগটি সারা রাত ফ্রিজে রাখুন। সকালে পেয়ে যাবেন সারা দিনের জন্য পুষ্টিকর পানীয়। পানির বদলে এই পানীয় পান করুন। তৈলাক্ত ও শুষ্ক ত্বকের জন্য আলাদা রূপ রুটিন দিয়ে দিচ্ছি।
শুষ্ক ত্বক
সারা বছরই শুষ্ক ত্বক একটু বেশি যত্ন দাবি করে। বাদলা দিয়ে তৃষ্ণা কম পায় বলে পানি কম খাওয়া হয়। এতে শুষ্ক ত্বকের শুষ্কতা আরো বেড়ে যায়। শুষ্ক ত্বক ভালো রাখতে সবার প্রথমে প্রচুর পানি খেতে হবে। নিয়ম করে দিনে দুবার ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। ধোয়ার পর আলতো করে মুখ মুছে অ্যালকোহল ফ্রি টোনার লাগান। এরপর ময়েশ্চারাইজার। শুষ্ক ত্বকের জন্য অয়েল বেইজ ময়েশ্চারাইজার কার্যকর। এক ভাগে গ্লিসারিনের সঙ্গে তিন ভাগ গোলাপজল মিশিয়ে স্প্রে বোতলে ভরে ফ্রিজে রাখুন। রাতে শোবার আগে মুখে স্প্রে করে আঙুল দিয়ে আলতো করে মিশিয়ে দিন। গ্লিসারিনের এই মিশ্রণ শুধু রাতে ব্যবহারের জন্য। ত্বক বেশি শুষ্ক হলে এই মিশ্রণ দেওয়ার পর আধা শুকনা ত্বকে অল্প পরিমাণে অলিভ অয়েল অথবা আমন্ড অয়েল লাগাতে পারেন। সকালে ঘুম থেকে উঠে ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুয়ে টোনার ও ময়েশ্চারাইজার লাগিয়ে নিন। বাইরে বের হতে হলে ময়েশ্চারাইজার লাগানোর পর কয়েক মিনিট অপেক্ষা করে তারপর সানস্ক্রিন লাগান। সপ্তাহে দুই দিন গোসলের আগে টক দইয়ের সঙ্গে উপটান ও অল্প চালের গুঁড়া মিশিয়ে ত্বকে লাগান। ১৫ মিনিট পর মাসাজ করে ধুয়ে নিন।
তৈলাক্ত ত্বক
বর্ষায় তৈলাক্ত ত্বকে ব্রণ ও হোয়াইট হেডস বেড়ে যেতে পারে। ত্বক পরিষ্কার রাখাই একমাত্র সমাধান। দিনে দুবার ত্বক পরিষ্কার করতে হবে। সকালে ঘুম থেকে উঠে এবং বাইরে থেকে ফিরে কিংবা রাতে শোবার আগে তৈলাক্ত ত্বকের উপযোগী ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধুতে হবে। শসা গ্রেট করে রস বের করে আইস কিউবে জমিয়ে বরফ করুন। দুবার মুখ ধোয়ার পর একটা আইস কিউব মুখে ঘষুন। ১০ মিনিট পর স্বাভাবিক পানি দিয়ে মুখ ধুয়ে প্রথমে টোনার তারপর ময়েশ্চারাইজার লাগান। এ ছাড়া সারা দিনে যখনই সুযোগ হবে মুখে ঠাণ্ডা পানির ঝাপটা দিন। বাইরে বের হলে ব্যাগে ময়েশ্চারাইজার রাখুন। ত্বক তৈলাক্ত হলেও প্রতিবার মুখ ধোবার পর ময়েশ্চারাইজার ব্যবহার জরুরি। সব ধরনের ত্বকের যত্নেই প্রচুর পানি পান করা খুবই প্রয়োজন। দিনে আড়াই থেকে তিন লিটার পানি পান করুন। তৈলাক্ত ত্বকে সপ্তাহে এক দিনের বেশি স্ক্রাবিং না করাই ভালো। স্ক্রাবিং করার ভালো সময় রাতে ঘুমানোর আগে। দিনের বেলা করা যেতে পারে, তবে স্ক্রাবিং করার ৬-৮ ঘণ্টা পর্যন্ত রোদে বের হওয়া যাবে না। ঘরোয়া স্ক্রাবার চাইলে চালের গুঁড়ার সঙ্গে পুদিনা পাতা পেস্ট করে মিশিয়ে নিয়ে ত্বকে লাগাতে পারেন। পুদিনার রসের বদলে শসা, গাজর বা তরমুজের রস মিশিয়েও নিতে পারেন।